মোহাম্মদ শাহী নেওয়াজ
জন্ম ও পারিবারিক পরিচিতিঃ একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৭৬ সালে কক্সবাজার জেলায় জন্ম। তার পিতা- আলহাজ্জ্ব এজাহার আহম্মদ (সওদাগর) একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী, দানশীল ও মানবকল্যাণধর্মী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। বাবার কর্মক্ষেত্র ছিল সংলগ্ন বান্দরবান পার্বত্য জেলার লামা ও আলীকদম উপজেলা। বাবা পার্বত্য বান্দরবান অঞ্চলেই সুদীর্ঘকাল কর্ম জীবন অতিবাহিত করেন ও বসবাস করেন এবং সাফল্যের সাথে কৃষি ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। এ সুবাধে জন্মলগ্ন হতে তিনি উপজাতীয় জীবনচিত্র, বৈচিত্রময় সমাজ ও সংস্কৃতির সাথে সুপরিচিত।
শিক্ষাজীবনঃ তার প্রাথমিক শিক্ষা জীবনের সূচনা গ্রামে। প্রাথমিক স্তর সমাপ্তির পূর্বে ১৯৮৬ সালে বড় বোনের আবাসস্থল শিল্পনগরী গাজীপুর গমন করেন এবং বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি উচ্চ বিদ্যালয়, গাজীপুর এ পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি হন। ফলে তিনি শিশুকাল হতে শিল্পায়ন ও শিল্প সমাজ সম্পর্কে পরিচিত হন। ১৯৯৩ সালে ঐ বিদ্যালয় হতে কৃতিত্বের সহিত এসএসসি পাশ করেন। ১৯৯৫ সালে ঢাকা সরকারি তিতুমীর কলেজ হতে কৃতিত্বের সহিত উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর ১ (এক) বছর অসুস্থ থাকেন। তিনি একাধিক বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমএসএস (সমাজকল্যাণ) বিষয়ে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হতে মাস্টার্স ইন প্রফেশনাল সোসাল ওয়ার্ক (মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায় বিচার) বিষয়ে এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতক ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষাজীবন শেষে চট্টগ্রামস্থ মেট্রোপলিটন কমার্স কলেজে প্রবেশনারী প্রভাষক (ব্যবস্থাপনা) হিসেবে ১ (এক) বছর কর্মরত ছিলেন।
কর্মজীবনঃ সমাজসেবা অফিসার/সমমান পদঃ বাংলাদেশ পাবলিক কমিশনের সুপারিশক্রমে ২০০৬ সালে ‘উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা’ হিসেবে বান্দরবান পার্বত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি জেলায় যোগদান করেন। পরবর্তীতে লামা, লামা ইউসিডি, আলীকদম, রোয়াংছড়ি ও প্রবেশন অফিসার হিসেবে ২০০৬ সাল হতে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দক্ষতার সহিত দায়িত্ব পালন করেন।
সহকারী পরিচালক/সমমান পদঃ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আদেশক্রমে ২০১৭ সালে ‘সহকারী পরিচালক’ হিসেবে পদায়ন করা হয়। তদপ্রেক্ষিতে ‘তত্ত্বাবধায়ক’ পদে পিএইচটি সেন্টার, চট্টগ্রাম যোগদান করেন। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে মন্ত্রণালয়ের আদেশক্রমে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ে ‘সহকারী পরিচালক’ পদে পদায়ন করা হয় এবং ২০২৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।
উপপরিচালক/সমমান পদঃ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটির সুপারিশক্রমে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে ‘উপপরিচালক’ হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন এবং নোয়াখালী জেলায় যোগদান করেন। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয়ের আদেশক্রমে ‘অধ্যক্ষ’ হিসেবে জাতীয় সমাজসেবা একাডেমি, আগারগাঁও, ঢাকায় পদায়ন করা হয়।
সামাজিক সচেতনতামূলক কর্ম ও গবেষণা কর্মঃ তিনি সমাজসেবা অধিদপ্তরের অনুমতিপ্রাপ্ত নিবন্ধকার। সামাজিক সচেতনতা জোড়দার ও কল্যাণমূলক ধারণা প্রচার এবং প্রসারের জন্য অবসর সময়ে ইস্যু ভিত্তিক সামাজিক নিবন্ধ লেখার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। যাহা জাতীয়, স্থানীয় ও অনলাইন পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশ হচ্ছে। তাঁর প্রকাশিত নিবন্ধসমূহের সমন্বয়ে দুটি বই প্রকাশ সম্পন্ন হয়েছে। যথা- সামাজিক উন্নয়ন ও মানবাধিকার (২০২১), সামাজিক সুরক্ষা ও উন্নয়ন (২০২৪)। তিনি সমাজসেবা অধিদপ্তরের অর্থায়নে ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৩ (তিন) গবেষণা কর্ম সম্পাদন করেছেন যথা- ১. বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে সমাজসেবা কার্যক্রম: একটি মূল্যায়নধর্মী সমীক্ষা ২. সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি হিসেবে বয়স্ক ভাতা জিটুপি পেমেন্ট ব্যবস্থায় বিতরণ: চট্টগ্রাম বিভাগ ভিত্তিক মূল্যায়ণধর্মী সমীক্ষা ৩. তামাক চাষের আর্থ-সামাজিক ও পরিবেশগত প্রভাব: বান্দরবান জেলাভিত্তিক সমীক্ষা।
সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী কর্মঃ তাঁর উদ্যোগে ও প্রস্তাবে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অর্থায়নে “কিশোর অপারাধ নিয়ন্ত্রণ ও সামাজিক অবক্ষয় প্রতিরোধে বিদ্যালয় সমাজকর্ম ব্যবস্থা প্রবর্তন” শীর্ষক উদ্ভাবনী ধারণা পাইলটিং আকারে বাস্তবায়ন করা হয়।
শিশু সুরক্ষামূলক কর্মঃ ইউনিসেফ ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত শিশু সুরক্ষামূলক সিএসপিবি প্রকল্পের আওতায় প্রায় পাঁচ বছর চট্টগ্রাম বিভাগের ফোকাল পারসন হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
পারিবারিক জীবনঃ তিনি বিবাহিত ও ০২ (দুই) কন্যা সন্তানের জনক। স্ত্রী- তৌহিদা আক্তার, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক পরিচালিত “দেওয়ান হাট সিটি কর্পোরেশন কলেজ, চট্টগ্রাম এ প্রভাষক (বাংলা) পদে কর্মরত আছেন।